Friday, August 6, 2021

রক্ষক-ভক্ষক








আজ আমি এক আশ্চর্য স্বপ্ন
দেখে উঠলাম।


রক্ষক আর ভক্ষক-এর এমন
বিশ্লেষণ 
আগে কখনও অনুভব
করিনি।  


দেখলাম হিরণ্যকশিপু, বালি,
শিশুপালকংস, রাবণ এরা
আমার মধ্যে ঢুকছে আর
বেরোচ্ছে। 
তারা করজোড়ে তাদের
হত্যাকারীদের স্তুতি করছে। 


হিরণ্যকশিপু বলছে, হে প্রভু,
সবাই তোমার উগ্র মূর্তি দেখলো,
তুমি যে আমাকে কোলে তুলে 
নিলে, সেটা কেউ দেখল না?  
কেন?

আমার পবিত্র প্রাণ বদ্ধ হয়েছিল
এক অপবিত্র 
দেহে,  তুমি সযত্নে
তাকে মুক্ত করলে। 
তোমার চরণে শতসহস্র প্রণাম।

দেখলাম বালি আর তিরস্কার করছে
না 
বিষ্ণু-অবতার রাম-কে। 
দেখলাম কংস-কেশিশুপাল
আর রাবণ-কে। 


তাদের সম্মিলিত কণ্ঠ কৃতজ্ঞতায়
গেয়ে উঠছে

তুমি রক্ষক, তুমি-ই ভক্ষক প্রভু,
আমাদের সংহার করে আমাদের
উপকার করেছ
হে অনাথ-নাথ। 

তোমার হাতে আমাদের
মৃত্যু-বরণ
,
এ ত নয় সাধারণ।

...


আমি চমকে উঠে পড়লাম,
জল-এর জন্য হাত বাড়াতেই
মাটিতে কাঁচের গেলাস-টা

পড়ে ঝনঝন করে ভেঙে গেল,  
আমার এতকাল-এর অটূট
বিশ্বাস-এর মত। 


বুঝলাম আমার মধ্যে বাস
করছে কম-বেশি 
এনারা
সকলেই।
মনস্থ করলাম নিজে-কে 
আর বাঁচাব না কোনভাবে-ই,
কোনমতে-ই;
প্রতিদিন চলার পথে, অসংখ্য
মিথ্যে-কথা 
বলি, বিলাসিতা,
অহংকার-এর বলি হই
অসভ্য শিক্ষা-র ফলে। 

ক্রোধে-র বিষোদ্গার-এ ভরিয়ে
ফেলি অহেতুক 
আমার ভুবন,
অর্থহীন তর্কে, উচিত কথা-র
অছিলায় কুপিয়ে মারি বন্ধুত্ব,
সম্পর্ক;
হয় নিষ্ঠুর কথায় প্রকাশ করি,
নয়ত অশালীন চিন্তায় টুকরো
টুকরো করি আমার-ই মত
চেনা-পরিচিত 
মুখ-গুলি কে। 
ক্ষতবিক্ষত হয় আমার বাগান।

আমার মনে হল যেন আমি সমগ্র
মানবজাতির-ই প্রতিনিধিত্ব করছি।  

হে বিষ্ণু
, আমার ভিতর অবস্থান কর,
আমাকে সংহার কর, তীরবিদ্ধ কর,
ব্রহ্মাস্ত্রে পরাজিত না হলে, অগ্নিবাণ
নিক্ষেপ কর
, তারা যেন সর্পের মত
আমায় আক্রমণ করে, আমাকে
পরাস্ত করে
আমায় কর পরাজিত।

আমার থেকে সমস্ত বিকর্ম-গুলি
তোমার নখের 
জোরে উৎখাত কর। 

তুমি আমার রক্ষক, আমার ভক্ষক
হয়ে 
আমায় উদ্ধার কর। এইভাবে
আসুক চৈতন্য, 

আমার আর আমার পৃথিবীর।

Saturday, July 31, 2021

a fish out of water

my world had left me behind,
I was trying to write about
love, about sweet nothingness,
how I kissed her forehead, held
her in my arms and she, how she’d
bend from her waist upside down
totally prepared to fall, in time
we fell out of love and decided to
part ways, the signatures stabbed
the papers,
when I tried to write about what I
don’t have anymore, the poem,
with decrepit words, erring
metaphors, misplaced
modifiers suffocated me under
the ocean of choices; took me
in its arms,
flew me to the zenith
of an
infamous mountain of possibilities,
threw me
off the cliff,
I was all over the place,
neither swim,
nor fly throughout the
requiem of
being with the senescent
poem…
I missed the zing thing…

I could feel the smell of the words
bleeding through my knotty nerves.
I fell for love, dead, unheard, unread

তাহলে গাছটা বাঁচে





সবাই একই গাছের শাখা প্রশাখা।
বিভিন্ন ডালপালা
একে অন্যের
সাথে দেখা সাক্ষাৎ 
হয়না ঠিক-ই,
কিন্তু উৎস সবার 
এক। 
এই চিন্তা-র,
এই ভালোবাসা-র জল 
যদি পায়,
তাহলে গাছটা বাঁচে।  

সবাই একই গাছের শাখা প্রশাখা।
কেউ গাছের ডাল ধরে ঝুলছে, কেউ
ফল, ফুল পাড়ছে, কেউ বা গাছের
ছায়ায় নীচে বসে আছে।
নানানরকম খেলা খেলছে, কেউ
ইকির মিকির, কেউ শাপ লুডো,
কেউ দাবা, কেউ বা ক্রিকেট,
ফুটবল, কেউ রান্নাবাটি; কোন
খেলাটা ভালো, কোনটা মন্দ তা
বিচার না করে সবাই যদি 
একে অন্যের ভরসা-র, 
সুখদুঃখের সাথী হয়,
তাহলে গাছটা বাঁচে।  

সবাই একই গাছের শাখা প্রশাখা।
কেউ শরীর চর্চা করছে, কেউ
বলছে হাঁটু ব্যথা, মাথা ব্যথা,
অম্বল; কেউ মেধাবী, জীবনে সফল,
কেউ সবেতেই অকৃতকার্য,
সবাই সবার মত করে পাতায় পাতায়
নিজেদের গল্প লিখছে
বিচার না করে
স্বীকার 
করে একে অন্যের ভরসা-র,
সুখদুঃখের সাথী যদি হয়
তাহলে গাছটা বাঁচে।  

সবাই একই গাছের শাখা প্রশাখা।
এক গাছের সাথে জড়িয়ে থাকার
আনন্দে সবাই মেতে থাকুক, তাদের
মতন করে, কেউ চায় ফুল, ফল, কেউ
তলায় বসে চড়ুইভাতি করতে চায়,
কেউ বা শুধু একটু ছায়া চায়। একটু
শান্তি চায়, খোলা আকাশে, আমাদের
এই গাছটির কাছে সবরকম ভাবেই
থাকার অবকাশ আছে। এখানে 
কেউ অনর্গল কথা বলছেকেউ চুপ
করে বসে আছেকেউ যাচ্ছে আর
আসছেযে যেমনভাবে থাকতে চায়
সে তেমন ভাবে যদি থাকে,
তাহলে গাছটা বাঁচে।

সবাই একই গাছের শাখা প্রশাখা।
এই চিন্তা-টা  মনের মধ্যে বারবার 
একটা বীজে-র মতন বপন করতে 
হবে।  আমরা নিজেদের বিস্তার করতে 
গিয়ে যেন বিচ্ছিন্ন না হয়ে যাই, আমরা 
যে একে অন্যের পরিপূরক, একে 
অন্যের প্রতি নির্ভরশীল এই কথা-টা 
যদি মনের মধ্যে গাঁথি, 
তাহলে গাছটা বাঁচে।   

সবাই একই গাছের শাখা প্রশাখা।
শুধু গাছটিকে ভালোবেসো সব,
এ যে আমার, তোমার, সবার
সাধের গাছ, কালিদাসের মত
নিজের গাছের ডাল কেটে ফেলো
না। আমরা যদি সবাই হাতে হাতে 
নিজের মতন করে এক-ই উৎস-কে 
উৎসবের মত নিত্য জীবন-স্বরূপ জল 
দিয়ে যাই, 
তাহলে গাছটা বাঁচে। 

আজকাল

 







আজ ভাবি বসে,
গতকাল-এর কথা।
আজ, তুমি বৃথাই এলে! 
আসবে তোমার গাথা
কাল মনের কোণে,
তুমি চলে গেলে।

অভাব

 







দিনরাত, রাতদিন
শুধু কাজ আর কাজ।
কাজ ছাড়া কোনও
কাজ নেই যেন,
এত কাজ করেও
অভাব
শেষ হয়না কেন?

ইএমআই






 ইএমআই

মাস জুড়ে ই এম আই
করে শুধু খাই খাই,
আয় করা টাকা-কড়ি
ফাঁকা হয় তাড়াতাড়ি,
পকেট গড়ের মাঠ হয়।

ইনকাম অনেক তবু
মনে হয় ভারি কম
লোভি ভিখারির শ্রম
সাতদিনে ফেলে দম
গিলে নেয় আধ মাসে
আছে যত ক্রেডিটারস
ডট কম।

জিনিষ-এর জঙ্গলে
বুলি শুধু আরও চাই,
আটকানো সকলেই
চাহিদার বেড়াজালে
ই এম আই গুলি করে 
সঞ্চয় মাঠে মারা যায়।  

Monday, July 26, 2021

নীলকণ্ঠ-এর আশায় পুনরায়

 






একটা কিছু কাজ
শুরু হলো কি না হলো,
লোকেরা ঝগড়া করে
বসে রইলো। আওয়াজ,
চিৎকার-এর মাঝে কাজ-টা
হয় শিকেয় উঠলো,
নয়ত ভেস্তে গেলো।

সারা ভুবন জুড়ে এই
চলেছে, ভালো কিছু
প্রচেষ্টা আরম্ভ হতে
না হতেই ইগোর হাতে
প্রাণ হারাচ্ছে। এই দমবন্ধ
হাঁপানিতে পৃথিবী অসুস্থ।

বাড়িতে, পাড়ায়, দেশে
বিদেশে এক-ই ধ্বংসে
মেতে উঠেছে উন্মত্ত মঞ্চ,
আজ গরল বেশরম আকাশে,
বাতাসে ত্রাস, নেই কোন বিশ্বাস,
নেই সরল মনোরম রোমাঞ্চ।

সুন্দর প্রকৃতি আজ বিধ্বস্ত,
দিকে দিকে শুধু এক সুর,
ঝগড়া আর ঝগড়া,
কোন ভূমিকম্প, কোন বন্যা,
কোনও মহামারী-র ঝড়,
কোনও দুর্ভিক্ষ, পারেনি
বদলাতে এ মূর্খ রগড়।

ইতিহাসের বিষের দশায়
সারা বিশ্বে হাহাকার,
নীলকন্ঠ তোমার আশায়
বসে আছে দেখ আবার
এ ঝগরুটে সংসার,
লোভী এরা সবাই, তবু
অমৃত-বিলাসী নগরবাসী
তারা, ঝগড়া করে শান্তি চায়,
এ হেন সুরাসম হলাহল তুমি
পান করে মোচন কর
অন্ধকার, তোমার
কণ্ঠে নাও পুনরায়
সবার পাপ-এর দায়ভার।

Saturday, July 24, 2021

বীণাপাণি, সরস্বতী

 









হে সর্বপাপহারিণী সরস্বতী
দিনে রাতে করি তোমার স্তুতি
ও গো সারদাও গো দেবী ভারতী,
তোমার অসীম আলোর জ্যোতি,
ফেরাক মোদের মতি, গতি
আনুক ধরায় শান্তি, স্থিতি
হে সর্বসিদ্ধিপ্রদায়িনী,
শুচিস্মিতা, বীণাপাণি।

তোমার জ্ঞানে, তোমার গুণে
তোমার শিক্ষা, তোমার গানে
সতেজ হোক না আগের মত
মোদের সবল মন,
অর্থ, বিদ্যা, কর্ম নকল
জলাঞ্জলি দিয়ে আসল
শিক্ষার-ই সেই অঞ্জলিতে
ভরুক আবার আনন্দেতে
মোদের এ ভুবন।

তোমার স্নেহে উঠুক হেসে
বিপন্ন জীবন,
মহামারী-র বিষাদে সে
ভীত সারাক্ষণ।
তোমার জ্ঞানের রসে
বাঁচুক সকল সরল প্রাণ,
তোমার বীণার সুরে বাজুক
জীবনের-ই গান।

হে সর্বপাপহারিণী সরস্বতী
দিনে রাতে করি তোমার স্তুতি
ও গো সারদা, ও গো দেবী ভারতী,
তোমার অসীম আলোর জ্যোতি,
ফেরাক মোদের মতিগতি
আনুক ধরায় শান্তিস্থিতি
হে সর্বসিদ্ধিপ্রদায়িনী,
শুচিস্মিতাবীণাপাণি।