তখন রবিবারে সকাল নটার সময়
সাইরেন বাজত,
তার আগেই পড়াশোনা
শেষ করে ফেলতাম,
বাবার সেই কাঠের মোটা লাল
পেন্সিলের দাগ মনের খাতায়
আজও অক্ষত আছে।


রবিবারে শুধু নটা পর্যন্ত পড়া,
তারপর ছুটি,
খেলা নয়তো কলকাতা ক শোনা।


পকেট ভর্তি গুলি নিয়ে
ছুটতাম গাইপার খেলতে,
শিশুমহলের সুর ভেসে আসতো,
ইন্দিরা দি বলতো,
"কী, ছোট্ট সোনা বন্ধুরা ভাই,
ভাল আছ তো?"
তারস্বরে উত্তর আসতো,
"হ্যাঁ"...


কখনও আবার কণিকা, সুবিনয় রায়,
বা অশোক তরুর "সঙ্গীত শিক্ষার আসর"
এর গান ভেসে আসতো!


দুপুর বেলা গমগম করতো
আমীন সায়ানি আর শ্রাবন্তীর গলায়;
"Bournvita Quiz Contest",
আর "Horlicks গানের আসর",


আমি বাইরে হয় গুলি, নয় পিটটু
কিম্বা ক্রিকেট খেলতাম,


আমাদের পুর পাড়াটাই
যেন একটা বড় বাড়ি ছিল,
মাংসের গন্ধে ম ম করতো
সারা পাড়া রবিবারের দুপুর


চোর চোর, লুকোচুরি, আইস বাইস খেলেছি প্রচুর,
বিপদে পড়লেই বলতাম "আব্বুলিস"!


মনে আছে অ্যাম্বুলেন্স বলতে পারতাম না,
তাকেও বলতাম অব্বুলিস।
''এই আব্বুলিস যাচ্ছে, এখন আব্বুলিস!''


আব্বুলিস মানে কি একটা চলন্ত খেলাকে
ক্ষণিকের জন্যে থামিয়ে দেওয়া,
নাকি নিজেকে আববুলিস বলে
খেলা থেকে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া,
নাকি চিরতরের জন্য বিদায় নেওয়া!


আজ আব্বুলিসে শুয়ে
পাড়া দিয়ে যেতে যেতে এই
কথাই ভাবছিলাম বড় হয়ে যাওয়া
আমি।


তখন সকাল নটা হবে, আমার ভিতরে
বাজছিল সাইরেন, বাইরে আব্বুলিস।