Sunday, October 28, 2018

আজও বেঁচে আছি



'হাজার বছর ধরে'
আমি হেঁটে চলেছি
তোমারি সাধা সূরে
আমাকে তুমি দূরে
ফেলে রেখেছো
আমি চিৎকার করে
জীবনের মঞ্চ থেকে
নেচে, গেয়ে, এমনকি মিনতি করেও
বলেছি, আমি চিত্রাঙ্গদা
'পার্শ্বে রাখো মোরে'
রান্নাঘরের আওয়াজে
কিংবা নিদারুণ ঘরোয়া কাজে
তোমার কানে এসে বাজেনি
বোধহয় আমার আর্তনাদ

আজ দেখো, আমি
ঘরের সিমানা থেকে
বেরিয়ে এসেছি,
আর অমনি আমি সীতা হয়েছি
গন্ডি অতিক্রম করেছি বলে
রাবণ হয়ে এসেছো তুমি
সবাই দেখেছে সীতার দোষ
তারা দেখেনি ধার্মিক ছদ্দবেশে
ভিক্ষার পাত্র নিয়ে আসা সন্ন্যাসীকে

আর কত ভিক্ষা দেব তোমাকে?
কোনো সময় দেহ, দুধ, রক্ত
তোমার নির্মম দৌরাত্ম
কোনো সময় মান সম্মান
আবার কোনো সময় অবলাপ্রাণ
এক সময় আমি সতী হতাম,
মনে আছে কি তোমার?

আজ এই যুগে দাঁড়িয়েও
মুক্তি পাইনি আমি
এখনো তুমি করো আমার বিচার
আমার আচার ব্যবহার
আমার ওঠাবসা কথা বলা
বেশভূষা, চলাফেরা
তোমারি মতো হাসি আল্হাদ
প্রমোদনের নেই আমার অধিকার
চিরকালের হাত-পাতা ভিখিরি
আমার মালিক হয়ে বসেছো

এতো কাণ্ডের পরেও মরিনি দেখো আমি
আজও বেঁচে আছি

অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা, ঘৃণা, হিংসা
লাঞ্ছনা, প্রতারণা, অন্যায়, ধর্ষণ,
বঞ্চনা, পণ্যদ্রব্য-ভাবা মন
তোমার এই দশ দোষ
দুই হাতে আমি করেছি বহন
যুগযুগ ধরে,
এখন তারা অস্ত্র হয়েছে আমার
আমার দূর্গা রূপ
তোমাকে করবে সংহার,
বেরিয়ে আসবে তুমি
এক নতুন রূপে
আবার জন্ম দেব আমি তোমায়
এই ধরার বুকে
তোমার যত অজ্ঞ অন্যায়
তোমারি কাছে ফিরে, করে হাহাকার;
তাই শিকার করবো আমি এই রঙ্গমঞ্চে
একে একে তোমার সব বিক্রম বিকার
বিদায় নেবে তারা সুনীল আকাশে
আমার হাতে মৃত্যূ করে স্বীকার

এই কবিতাটি তিলোত্তমা ম্যাগাজিনে এ প্রকাশিত হয়েছে

No comments:

Post a Comment